গজনির সুলতান মাহমুদের বীরত্ব পড়ানো হয় ইতিহাসে
তো ইতিহাসের অপব্যাখ্যা!
আমি যতবার তার বীরত্ব! পড়ি
আমার চোখের সামনে এসে দাড়ায়
রক্তাক্ত হাতে এক নরপিচাশের প্রতিকৃতি!
তাকে বীর আখ্যা দেয়া মানে আমার কাছে জল্লাদকে নিষ্পাপ, পবিত্র বলা!
আমি তাকে বীর বলিনা,
বরংচ তিনি যা ছিলেন তাকে তাই বলি,
তিনি একজন লুটেরা, খুনি, ধর্ষক, ডাকাত! সভ্যতার বিনষ্টকারী

তাজমহলের সৌন্দর্যে বিমোহিত গোটা বিশ্ব
আমিও মুগ্ধ হয়েছি বহুবার,
প্রেমিকাকেও বলেছিলাম আমিও তাজ গড়বো দেখো!
সেই তাজ আর গড়া হয়নি, হবেও না কোন কালে!
কারণ, যখন জেনেছি এর সৌন্দর্যের অন্তরালে লুকিয়ে কি নির্মমতা!
প্রেমের প্রতিকৃতি গড়েছে শাহজাহান আড়ালে রেখে বর্বরতা!
আমি তাকেও শিল্পের বিনাশী এবং শিল্পীর হত্যাকারী বলে জানি।
গঙ্গার জলে ভরা পূর্ণিমায় তাজ নাকি আরো বেশি প্রাণবন্ত!
না, আমার কাছে চাঁদনী রাতে জ্বলজ্বল করা তাজমহলের দেয়াল দেখে মনে হয়
হাজার শ্রমিকের রক্তের আলপনা!
হাজারো নারীর সোহাগ মাখা সিঁথির রঙ্গিন সিদুরের
অভিশাপ বয়ে চলা শোকের সৌধ!
তাজকে ভালাবাসার নিদর্শন বলা তাই আমার কাছে অবৈধ!

#নিরো

০১/১০/২০১৫ইং


কবিতাতে প্রাণ নেই এখন আর হারিয়ে গেছে
নেই আর আগের মত ছন্দ সুরের মিল,
হারিয়ে গেছে দুপুর রোদে ডানা মেলা শঙ্খচিল!

অতল নদী শীতল এখন
নেই তাতে আর আগের মত স্রোত,
গুণ বিচারে অন্ধ মানুষ আজ দেখে বাইরের রূপ!

মাটির দেহ সে যেন লোহার খাঁচা
কৃত্রিমতায় শূণ্যের কোঠায় আবেগ-অনুভুতি,
কোঠরে লুকিয়ে কষ্টগুলো ঠোঁটে হাসি যেন আমি কতইনা সুখি!

জীবনের ভীড়ে যৌবন হারায়
অর্থ আর লোভের ভীড়ে মন,
লোক দেখানো বন্ধন কত! আসলেতো সবই প্রহসন!
(আংশিক)

#নিরো
১৩/১১/২০১৬ইং

যন্ত্র এখানে মনের থেকে বেশি অনুভূতিশীল
পুড়া মাটি আর লোহায় গড়া আমার এ শহর,
হাজারো মানুষের পথচলা প্রতিদিন তবুও,
সবাই যেনো নিসঙ্গতায় কাটায় প্রতিটি প্রহর!

এখানে সকালে সূর্য্য উঠে তবু পাখি ডাকেনা
দিনের শেষে ক্লান্ত বিকেলে ম্লান হয় সূর্য্যের সেই হাসি,
সন্ধ্যা নামে রাজপথে, চার দেয়ালে বন্দিত্ব বরণ আবার
সামাজিক হতে তাই যন্ত্রে মুখ গুজে সামাজিকতা খুঁজি।

#নিরো
০৩/০৫/২০১৬ইং

"ভিখারির ঘরে জন্ম নিয়ে
কেন আমার রাজার হালে চলা?
সমাজে যার স্থান ৩য় শ্রেণীর
তার কেন এত শুদ্ধ করে কথা বলা!

এমনই অনেক হাজারো প্রশ্নবাণ,
ছুঁড়ে দেয় আমায় প্রতিনিয়ত
সে বাণের বিষ এতটাই বিষাক্ত!
কানে প্রবেশ করলেই নিথয় হয় দেহ-প্রাণ!

অনেকে আবার গবেষণা করে আমি কে বা কি?
বিষয়টা কিছুটা এমন,
যেন অন্ধের নাম পদ্মলোচন!
আর শীতের সকালে যেন অপ্রত্যাশিত বৃষ্টি!

অভাবের মাঝে জন্ম যার তার প্রতি পদে পদে অপরাধ,
যত বিশেষণ আছে নামের পাশে
দিন শেষে তাই হয় অপবাদ!"
(আংশিক)


#নিরো ০৭/০৭/২০১৫ইং


দূঃখ দেবে বল তুমি কাকে ?
যার মনে দূঃখ থাকে বারমাস,
বিরহের আগুনে পোড়াবে কাকে ?
যার হৃদয়ে আগুন করে বসবাস
কাঁদাতে চাও বল তুমি কাকে ?
যার চোখের অস্রুতে ধুয়ে গেছে স্বপ্ন
তাকে নতুন করে কি কাঁদাবে ?
সেই চোখতো কাঁদতে জানে ॥॥॥

কার আকাশ তুমি মেঘে ঢেকে দেবে ?
যার আকাশে নেই কোন সুখ,
কার বুকে আঘাত করবে তুমি ?
যন্ত্রনা জমা আছে যার কাছে একবুক ॥॥॥

হাড়ানোর ভয় তুমি দেখাবে কাকে ?
যে হৃদয় সব কিছু হাড়িয়ে ফেলেছে,
হাড়ানোর ব্যাথা সেতো সইতে জানে ॥॥॥

কার ঘরের আলো তুমি নিভীয়ে দেবে ?
আঁধার যাকে আঁকড়ে ধরে আছে,
কার সাজানো বাগান তুমি পোড়াবে আগুনে
যার বাগানের ফুল গুলো ঝড়ে গেছে ॥॥॥

#নিরো
০৬/০১/2২০০৬ইং


"নাইবা তুমি বাসলে ভালো আমাকে
তাই বলে আমার কি যায় আসে তাতে?
কিছু না হয় নাইবা পেলাম প্রেমের প্রতিদানে
তবুও কিছু পেয়েছিতো তোমায় ভালোবেসে।
সুখ না হয় চেয়ে আমি দুঃখই পেলাম,
স্বপ্ন না দেখে চোখে বৃষ্টি ঝরালাম॥

হয়তো তুমি ভাবছো বসে তোমার সুখের কথা,
তাইতো আমার হৃদয় মাঝে একা থাকার ব্যথা॥
হয়তো ভাবতে শুধু কি হতে কি হয়,
তাইতো সহজেই পেরেছো ভুলতে পরিচয়॥

হয়তো তুমি করতে হিসেব তোমার লাভ ক্ষতি,
তাইতো আমার একালেও হলো না যে গতি॥
হয়তো তুমি অভিমানকে রাখতে চেপে মনে,
তাইতো আপন কেউ হলোনা আমার জীবনে॥"

#
নিরো
১৫/০৬/২০০৫ইং


"একটা জনম কেটে গেলো বয়ে বোঝা ব্যথার,
আরো যদি জনম থাকে
দিওনাতো মন বিধি তারে ভালোবাসার॥
অনেক কেঁদেছি
বিরহে পুড়েছি
সে জনমে কাঁদতে আমি চাইনাতো আর॥

চোখ দিয়ে যার বইছে নদী সেইতো শুধু জানে
আপন মানুষ পর ভেবে দাগ কেটেছে মনে॥
হিয়ার ভিতর দিয়া ব্যথা নেয়নি খবর আর
মেঘ গলে যে বৃষ্টি পরে গলেনি তো পাষাণ হৃদয় তার॥

বিরহে শেষ যদি হয় ভালোবাসা না হয়ে মিলন
অপূর্ণতা না পাওয়ায় হাড়িয়ে যাবে কি তবে একটি জীবন?
চলি করে পথ চলা এক সাথে হয়নি আর
স্বপ্ন মন পুড়ে পুড়ে শ্বশ্মান ভাঙ্গেনি ভুল তবু তার॥"
#নিরো
০৮/১১/২০০৭ইং

মাগো দূর্গতিনাশিনী স্বর্গবাসিনী
স্বর্গপুরে কি এবার কোন খাবার বাঁচেনি?
নিয়ে এসো মা সাথে মনে করে দিওনা তা ফেলে,
ভেবোনা শেয়াল কুকুরে খাবে!
খাবে তারাই, যাদের সবাই মানুষই বলে!
তুমিতো মা আসছো বাপের বাড়ি
খাবে বলে ঘিয়ে তেলে,
জানো কি মা সারাবছর উপবাসী থাকে
তোমার কত মেয়ে ছেলে?
ওরা দেখি কত মন্ডা মিঠাই আরো কতনা
সুগন্ধী খাবারে দেয় তোমার ভোগ,
জানো কি মা?
কারো কাছে সেই সুখটাই মরার মত শোক!
এই যে এতো জমকালো আলো
পাশেই আঁধার দিচ্ছে স্বহাস্যে ভ্রুকুটি,
তুমিনা মা ত্রিনয়না?
তোমার কি হয়না গোচর দৃষ্টি?
তোমার পুত্র বলে দাবি করা মর্তে আছে যত অসুর,
বলে দাও মা এবার তুমি আসবেনা নিতে
অনাহারির ক্ষুধার অর্ঘ,
রয়ে যাবে স্বর্গপুর।
নয়তো বলো বেল পাতা, জল-ফুলে
তোমায় যেন ঘরে তুলে,
মানুষ নামের সত্যি দেবতা যারা
দেয় যেনো তার গায়ে জামা আর দুটো অন্ন মুখে।
ভালো না বাসলে মানুষ দেবতারে
মাটির দেবী কি করে তাতে খুশি হয়?
উদর পুরিতে ক্ষুধার দাবানল জ্বেলে
দেবীর পূজা না হয়।
তুমি না মা?
আর মা কি কখনো সন্তান না খাইয়ে
অন্ন মুখে না লয়?


#নিরো
২৯/০৯/২০১৬ইং




ঘুমের ঘোরে দুচোখ জুড়ে
স্বপ্ন আসে কত!
সকাল বেলা সূর্য্য এসে
সে স্বপ্ন বানায় ক্ষত।

স্বপ্নমাঝে আমার তুমি
শুধু যেন আমারই,
স্বপ্ন ভাঙ্গলে খোঁজে ফিরি
কোথায় তুমি?

জানতে যদি কখনোবা
আমার তুমি কে?
আমায় ছেড়ে এত দূরে
পারতে কি থাকতে?

জানবে যখন আমায় তখন
ভীষণ ভালবাসবে,
চলতে পথে তোমার হাতে
আমার হাতটা রাখবে।

এমনই আমার ভাবনা
যা কখনো হওয়ার না॥

অজানায়ই থেকে যাবে তোমার কাছে
আমার যত চাওয়া হয়তো,
জানবে যখন দেখবো তখন
তুমি অন্যকারো নয়তো॥

আমার জন্য তুমি ছিলে
তোমার আমি নই,
আমার ভালবাসা শুধু
তোমায় দূর থেকে ভালাসার জন্যই॥

কল্পনাতে আমার তুমি
বাস্তবতায় নও,
ভাল থেকো সুখে থেকো
নাইবা আমার হও॥

#
নিরো
৩০/১০/২০১৩ইং